দর্পন ডেস্ক : রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত শাহবাগ ব্লকেডের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
শুক্রবার (০৯মে) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার পাশে মিন্টো রোডের ফোয়ারার সামনের সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেন তিনি।
ঘোষণার পর সমাবেশ থেকে হাসনাত আব্দুল্লাহ নেতৃত্বে সাধারণ ছাত্র জনতার একটি মিছিল শাহবাগের দিকে যায়। এবং শাহবাগ অবরোধ করে রাখেন।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পার্শ্ববর্তী সড়কের সমাবেশ সমাপ্ত করে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আন্দোলনকারীরা হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের পার্শ্ববর্তী সড়ক থেকে শাহবাগ মোড়ে এসে জড়ো হচ্ছেন। যার ফলে আশপাশের সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ড ও ফেসটুন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি এবং গণহত্যার বিচারের আহ্বান দেখা যায়।
সাধারণ মানুষ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এই অবরোধে অংশ নেন। অবরোধের কারণে শাহবাগ থেকে সায়েন্সল্যাব, টিএসসি এবং বাংলামোটরগামী রাস্তায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
শুক্রবার (৯ মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের পার্শ্ববর্তী সড়কে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনের মঞ্চ থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধের এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
হাসনাত বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের কথা পৌঁছায় না। তাদের কাছে শহীদের আওয়াজ পৌঁছায় না, আহতদের আর্তনাদ পৌঁছায় না। আমরা এখান থেকে বের হয়ে শাহবাগ অবরোধ করব। যতক্ষণ না পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে, ততক্ষণ আমরা অবরোধ করে রাখব।
তিনি বলেন, ইতিহাসের প্রত্যেকটি স্তরে স্তরে আওয়ামী লীগের হাতে রক্ত লেগে রয়েছে। আওয়ামী লীগ যে শুধু ক্ষমতায় থাকাকালীন রক্ত ঝড়িয়েছে বিষয়টি এমন নয়, ২০০৬ সালে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে মানুষকে হত্যা করেছে। ২০০৯ সালে ভারতের সহায়তায় পিলখানায় আমাদের বিডিআরের সদস্যদের হত্যা করেছে। ১০০টা ফেরাউন, ১০০টা নমরুদকে যদি একসাথে করা হয়, তাহলে একটা হাসিনা পাওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টারটা ৫ আগস্ট ক্লোজ হয়ে গেছে, এটাকে রিওপেন করার চেষ্টা করবেন না।
এ সময় হাসনাতের সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আরেক মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। হাসনাতের এ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে উপস্থিত ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, আমাদের লড়াই মাত্র শুরু হয়েছে। যতক্ষণ না আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা রাজপথ ছাড়ব না।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত থেকে যমুনার সামনে চলা অবস্থান কর্মসূচির সূচনা করেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ। রাত ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে ধাপে ধাপে যোগ দেন এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, হেফাজত, এবি পার্টি, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা।